শরীরের ওজন কমাতে শসার কার্যকারিতা
শসা খেলে শরীরের ওজন কমে। তাই বলা যায় শরীরের ওজন কমাতে শসার কার্যকারিতা অনেক।
আমরা অনেকেই ভাবি শরীরের ওজন কমাতে শসার কার্যকারিতা নেই। কিন্তু আসলেই শরীরের
ওজন কমাতে শসার কার্যকারিতা অনেক গুণ বেশি।
শসা আমরা কম বেশি সকলেই খাই। শসা শরীরের ওজন কমাতে অনেক কার্যকরী। চলুন তাহলে
জেনে নেই শরীরের ওজন কমাতে শসার কার্যকারিতা।
পেজ সূচিপত্রঃ শরীরের ওজন কমাতে শসার কার্যকারিতা
যে কারণে শসা খাবেন
ডিটক্সিফিকেশন শসার মধ্যে থাকা জল আমাদের শরীর থেকে বর্জ্য এবং টক্সিন দূর করতে
একটি অদৃশ্য স্পঞ্জের মতো কাজ করে। প্রতিদিনের ভিটামিনের শূন্যতা পূরণ করে,
ত্বক-বান্ধব খনিজ সরবরাহ করে, হজম ও ওজন কমাতে সাহায্য করে, দৃষ্টিশক্তি উন্নত
করে, ক্যান্সার প্রতিরোধ করে, ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে, মুখ
পরিষ্কার রাখে, শরীরের ওজন কমাতে শসার উপকারিতা এবং ডায়াবেটিস থেকে ডায়রিয়া
সবার জন্য শসা অপরিহার্য। প্রচণ্ড গরমে শসা শরীরের পানির ইলেক্ট্রোলাইটের
ভারসাম্য বজায় রাখে।
রোগমুক্ত থাকতে শসা খাওয়ার উপকারিতা
শরীরকে টক্সিন মুক্ত রাখতে সাহায্য করে শসা। এমন কী এই সবজি শরীরকে ডিটক্সিফাই
করে। সুস্থ ও ফিট থাকার জন্য শরীর ডিটক্স থাকা জরুরি। বিশেষজ্ঞদের মতে শসাতে
প্রচুর পরিমাণে পানিসহ ভিটামিন সি, কে ইত্যাদি রয়েছে যা ওজন কমাতে সাহায্য করে।
শরীরের ওজন কমাতে শসা কার্যকারিতা অনেক।
পুষ্টিবিদদের মতে, এই সবজির মধ্যে ফাইবার, পটাশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম রয়েছে। এই
উপকারী উপাদানগুলি রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে। চিকিৎসকদের মতে এই সবজি
ডায়াবিটিস রোগকেও নিয়ন্ত্রণে রাখে। তাই বলা যায় শরীরের ওজন কমাতে শসার
কার্যকারিতা অনেক রয়েছে।
শসা খাওয়ার উপকারিতা
শরীরের ওজন কমাতে শসার কার্যকারিতা বলে শেষ করার মতো না। শসা আমাদের শরীরের
বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দূর করে। নিম্নে শসা খাওয়ার উপকারিতা গুলো দেওয়া
হলোঃ
শরীর হাইড্রেটেড রাখে
হাইড্রেশন শরীরের গুরুত্বপূর্ণ ফাংশন বজায় রাখার চাবিকাঠি। দিনে দশ থেকে বারো
গ্লাস পানি এবং অন্যান্য তরল খাওয়া গুরুত্বপূর্ণ। এক্ষেত্রে শসা আপনার
হাইড্রেশনের চাহিদা পূরণ করতে পারে। শসাতে ৯৬% পর্যন্ত পানি থাকে। যা আপনার
হাইড্রেটেড রাখতে এবং দৈনন্দিন চাহিদা মেটাতে পারে। ফল এবং শাকসবজির মাধ্যমে
পর্যাপ্ত পানি শরীরে পৌঁছালে কোষগুলো সঠিক পুষ্টি পায়, ক্লান্তির সঙ্গে লড়াই
করতে পারে এবং সারাদিন শক্তি বজায় থাকে। শসা একটি ভালো নাস্তাও হিসেবেও নিতে
পারেন।
জয়েন্টের ব্যথার উপশম করে
আপনি যদি মাঝেমধ্যেই জয়েন্ট এবং পেশীর ব্যথায় ভোগেন তবে আপনার ডায়েটে প্রচুর
শসা এবং অন্যান্য সবুজ সালাদ যোগ করুন। শসা কেবল ত্বকের স্বাস্থ্যের জন্যই ভালো
নয়, এটি হাড় ও পেশীকেও শক্তিশালী করে। এটি ব্যথার ক্ষেত্রে একটি ভালো নিরাময়
হিসাবে কাজ করে। দীর্ঘস্থায়ী ব্যথা এবং আর্থ্রাইটিস থেকে মুক্তির জন্য একটি
প্রাকৃতিক প্রতিকার হলো শসা। কিছু গবেষণায় বলা হয়েছে যে, শসার কুলিং ইফেক্ট
শরীরের প্রদাহজনক প্রতিক্রিয়া প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। সেই সাথে তৈরি
করে ভালো এনজাইম, যা ব্যথা উপশম করে। বয়স বৃদ্ধির সাথে সাথে নিয়মিত শসা খেতে
শুরু করেন।
টিস্যু তৈরি এবং রক্ত প্রবাহ
শসা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ। যা আপনার শরীরের জন্য খুব ভালো এবং
গুরুত্বপূর্ণ কার্যকারিতাকে উপকৃত করে। শসায় উপস্থিত উচ্চ অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট
রক্ত প্রবাহ নিয়ন্ত্রণ, ফ্রি র্যাডিকেলের সঙ্গে মোকাবিলা এবং শরীরে
টিস্যু বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। তাই বলা যায় এটি দীর্ঘস্থায়ী রোগ এবং সংক্রমণের
ঝুঁকি কমায়।
শরীরের ওজন কমাতে শসার কার্যকারিতা
অনেকে ওজন কমাতে অনেক ধরণের ডায়েট ফলো করে, তার মধ্যে একটি হচ্ছে শসা খেয়ে ওজন
কমানো। শসা হচ্ছে একটি লো ক্যালরি বা খুব কম ক্যালরিযুক্ত একটি খাবার। শসার
মধ্যে পানির পরিমাণ অনেক।
আরো পড়ুনঃ মুখে শসা ব্যবহারের নিয়ম
সহজে ওজন কমানোর জন্য সেরা একটি খাবার হলো শসা। যখন কেউ ওজন কমাতে চান তখন
বেশিরভাগ বিশেষজ্ঞরাই শসা খাওয়ার পরামর্শ দেন। তাই বলা যায় শরীরের ওজন কমাতে
শসার কার্যকারিতা অনেক বেশি। এটি যে কেবল হজমে সহায়ক তা নয়, সেই সঙ্গে ফাইবার
এবং পর্যাপ্ত পানি থাকে এই সবজিতে।
- এতে ক্যালোরির পরিমাণ খুবই কম থাকায় ওজন কমানো বেশ সহজ হয়। শসায় এক্সট্রা ফ্যাট-প্রোটিন (২ গ্রাম), কার্বোহাইড্রেট (২ গ্রাম), ভিটামিন কে (৬২% আরডিআই), ম্যাগনেসিয়াম এবং পটাসিয়াম রয়েছে। শুধু তাই নয় এতে কোনো ফ্যাট নেই। নিয়মিত শসা খেলে তা চর্বি কমাতে কাজ করে। প্রাকৃতিক উপায়ে শরীরের ওজন কমাতে শসার কার্যকারিতা অনেক বেশি। নিম্নের শরীরের ওজন কমাতে শসার কার্যকারিতা গুলো দেওয়া হলোঃ
- সালাদ বানিয়ে খেতে পারেন। শসার সঙ্গে টমেটো, মূলা, গাজর, পেঁয়াজ, কাঁচা মরিচ এবং লবণ মিশিয়ে সালাদ বানিয়ে নিন। এটি আপনার একবেলার খাবার। ভারি কোনো খাবারের বদলে আপনি শসার সালাদ খেতে পারেন। এটি অনেকক্ষণ আপনার পেট ভরিয়ে রাখবে। অন্যদিকে ওজন কমাতে সহায়তা করবে। তাই শরীরের ওজন কমাতে শসার কার্যকারিতা অনেক।
- শসার পানীয় খেতে পারেন। এটি ওজন কমাতে দুর্দান্ত কাজ করে। তাজা একটি শসা টুকরো করে কেটে নিন। এবার পুদিনা পাতা, তুলসি পাতা, লেবুর রস এবং পরিমাণ মতো পানি মিশিয়ে নিন। এবার এটি পান করুন। এতে করে আপনার শরীরের ওজন কমতে থাকবে। শরীরের ওজন কমাতে শসার কার্যকারিতা এর মধ্যে এটি অন্যতম একটি সহজ পদ্ধতি।
- এমনি যদি শসা খেতে না পারেন তাহলে পাস্তা বা নুডুলসের সঙ্গে মিশিয়েও শসা খেতে পারেন। এভাবেও শরীরের ওজন কমাতে শসার কার্যকারিতা রয়েছে।
- ওজন কমাতে টকদইয়ের সঙ্গে শসার টুকরো মিশিয়ে খেতে পারেন। এটিও শরীরের ওজন কমাতে শসা কার্যকারিতা এর মধ্যে অন্যতম।
উপরোক্ত বিষয়ে শরীরের ওজন কমাতে শসার কার্যকারিতা কতটুকু তা সম্পর্কে আমরা
আলোচনা করেছি। আশা করি এ বিষয়টি আপনাদের বুঝতে কোন অসুবিধা হয়নি।
শেষ কথাঃ শরীরের ওজন কমাতে শসার কার্যকারিতা
অন্য খাবারের সাথে শসা থাকলে খাবার সুস্বাদু হয়। এছাড়াও খাবারটা ধীরে ধীরে হজম
হয়। যা আপনার ওজন কমাতে সাহায্য করবে। তখন রক্তের চর্বি কমাতে সাহায্য করবে।
এক্ষেত্রে অবশ্যই সম্পূর্ণ খাবারের ক্যালরি আপনার শারীরিক গঠন, বয়স, শারীরিক
পরিশ্রম ইত্যাদির ওপর নির্ভর করে ঠিক করে নিতে হবে। এছাড়াও শসার বীজ
কোষ্ঠকাঠিন্য ও ডায়াবেটিস প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে। তাই বলা যায় শরীরের ওজন
কমাতে শসার কার্যকারিতা বহু গুণ বেশি।
উপরোক্তা বিষয় থেকে শরীরের ওজন কমাতে শসার কার্যকারিতা সম্পর্কে আমরা সুস্পষ্ট
ধারণা পেয়েছি। আশা করি এই পোস্টটি পড়ে আপনাদের অনেক উপকারে এসেছে। আজকের এই
পোস্টটিতে অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। যা আমাদের সকলের
জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ একটা বিষয়। ২৫৮৯০
এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url