বিদ্যুৎ চমকালে দোয়া - বিদ্যুৎ চমকানো কি
বিদ্যুৎ চমকালে দোয়া সম্পর্কে আমরা অনেকেই জানিনা। কিন্তু আমরা যারা মুসলিম রয়েছি সাধারণত কোন বিপদে পড়লে আল্লাহ তায়ালার কাছে দোয়া চাই। যখন অতিরিক্ত বিদ্যুৎ চমকায় সাধারণত তখন বিদ্যুৎ চমকালে দোয়া পড়তে হয়। আজকের এই আর্টিকেলে বিদ্যুৎ চমকালে দোয়া সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে।
আপনি যদি বিদ্যুৎ চমকালে দোয়া না জেনে থাকেন তাহলে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে পড়ুন। তাহলে চলুন আর দেরি না করে বিদ্যুৎ চমকালে দোয়া সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।
পেজ সূচিপত্রঃ বিদ্যুৎ চমকালে দোয়া - বিদ্যুৎ চমকানো কি
বিদ্যুৎ চমকানো কি
যখন আকাশে প্রচন্ড পরিমাণে মেঘ থাকে তখন বিদ্যুৎ চমকায় সাধারণত আমরা সকলেই জানি। অনেক সময় এই বিদ্যুৎ চমকানো থেকেই বজ্রপাত হয় এবং অনেক মানুষের মৃত্যু হয়। কিন্তু আমাদের মধ্যে অনেকে আছে যারা বিদ্যুৎ চমকানো কি? এ বিষয়টি সম্পর্কে জানেনা। যেহেতু আজকের এই আর্টিকেলে আমরা বিদ্যুৎ চমকালে দোয়া নিয়ে আলোচনা করব সেহেতু প্রথমে আমাদেরকে বিদ্যুৎ চমকানো কি? তা জেনে নিতে হবে।
আরো পড়ুনঃবজ্রপাত নিয়ে ক্যাপশন - বজ্রপাত নিয়ে কবিতা
বিদ্যুৎ চমকানো বলতে আমরা অতিরিক্ত মেঘের সময় যখন আকাশে আলোর ঝলকানি দেখতে পাই সাধারণত এগুলোকেই বিদ্যুৎ চমকানো বলে। এই সময় ওই এলাকার বাতাসের প্রসারন ও সংকোচন এর ফলে আমরা বিকট শব্দ শুনতে পাই। এই ধরনের বৈদ্যুতিক আধানের নির্গমন দুটি মেঘের মধ্যে অথবা একটি মেয়ে এবং ভূমির মধ্যে হতে পারে। সাধারণত বিদ্যুৎ চমকায় যখন তখন ডিসি কারেন্ট তৈরি হয়।
পরিষ্কার কথায় বলতে গেলে যখন অতিরিক্ত পরিমাণে আকাশে মেঘ দেখা যায় সাধারণত তখন আকাশে যে আলোর ঝলকানি দেখা যায় সাধারণত তাকেই বিদ্যুৎ চমকানো বলে। এই বিদ্যুৎ এবং আমরা বাসা বাড়িতে যে বিদ্যুৎ ব্যবহার করি সাধারণত এগুলো প্রায় একই রকম। সাধারণত এই সময় বিদ্যুৎ চমকায় এবং প্রচন্ড পরিমাণে শব্দ শুরু হয়।
কিভাবে বিদ্যুৎ চমকায়
বিদ্যুৎ চমকালে দোয়া জানা থাকলে আমরা খুব সহজেই এই সময় আল্লাহতালার কাছে দোয়া করতে পারি। কিন্তু সাধারণ জ্ঞান হিসেবে আমরা অনেকেই কিভাবে বিদ্যুৎ চমকাই এ বিষয়গুলো সম্পর্কে জানিনা। সাধারণত প্রতিবছর বিশেষ করে বৈশাখ মাসে বিদ্যুৎ চমকানোর পরিমাণ অন্যান্য মানুষের চাইতে বেশি দেখা যায়। তাহলে চলুন কিভাবে বিদ্যুৎ চমকায় তা জেনে নেওয়া যাক।
আমরা জানি যে পানি জলীয় বাষ্প হয়ে আকাশে উঠে যায় সাধারণত এই পানি ধীরে ধীরে বরফে পরিণত হয়। যখন অতিরিক্ত মেঘ উঠে সাধারণত আবহাওয়া এতটাই ঠান্ডা হয়ে যায় যে এগুলো অনেক শক্ত বরফে পরিণত হয়। সাধারণত এই বরফের বরফের সংঘর্ষ হওয়ার কারণেই বিদ্যুৎ চমকায় এবং বিদ্যুৎ চমকানোর শব্দ শোনা যায়।
মেঘের উপরের অংশ ধনাত্মক চার্জ গ্রস্ত হয় এবং নিচের অংশ চার্জ গ্রস্ত হয়। সাধারণত জলীয় বাষ্পের উপরের দিকে ওঠার সময় মেঘের নিচের অংশ সাথে সৃষ্টি সংঘর্ষের উপরের দিকে উঠতে থাকা দলীয় পানা থেকে ইলেকট্রন বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। এই ইলেকট্রন গুলো মেঘের নিচের অংশের জমা হয় আর ইলেকট্রন হারিয়ে ধনাত্মক চার্জ গ্রস্ত হয়ে পড়া বাষ্পগুলো উপরের দিকে উঠে যায়। সাধারণত এই প্রক্রিয়ার কারণেই মেঘ ধনাত্মক এবং ঋণাত্মক চার্জ গ্রস্ত হয়ে পড়ে।
বিদ্যুৎ চমকালে দোয়া
সাধারণত ইসলামিক দৃষ্টিকোণ থেকে প্রতিটি সময় আল্লাহতালার কাছে দোয়া করতে হয়। বিশেষ করে যখন বিপদের সম্মুখীন হয়ে থাকে সাধারণত তখন বেশি করে দোয়া করা উচিত। ইসলামিক দৃষ্টিকোণ থেকে প্রতিটি বিষয়ের জন্য বিভিন্ন ধরনের দোয়া এবং দুরুদ রয়েছে। প্রতিবছর আমাদের দেশে বিদ্যুৎ চমকানো অর্থাৎ বজ্রপাত থেকে অনেক মানুষের মৃত্যু হয়। সাধারণত এই সময় অবশ্যই আমাদেরকে বিদ্যুৎ চমকালে দোয়া পড়ে নেওয়া উচিত।
আরো পড়ুনঃ সিলেট জেলার উপজেলা সমূহের নাম
আয়েশা রাঃ বলেন, যখন আকাশ মেঘাচ্ছন্ন হতো এবং ঝোড়ো বাতাস বইত তখন রাসুল সাঃ এর চেহারায় চিন্তার রেখা ফুটে উঠত। এই অবস্থা দেখে তিনি এদিক সেদিক পায়চারি করতে থাকতেন এবং নিচের দোয়াটি পড়তেন তারপরে শান্ত হতেন।
আয়েশা রাঃ বলেন, "আমি রাসুলুল্লাহ সাঃকে এ বিষয়ে জিজ্ঞেস করেছি যে লোকজন মেঘ দেখলে বৃষ্টির আশায় আনন্দিত হয়ে থাকে আর আপনি তা দেখে চিন্তিত হয়ে পড়েন?" রাসুল সাঃ বলেন, "আমি এ ভেবে শঙ্কিত হই যে বৃষ্টি আমার উম্মতের ওপর আজাব হিসেবে পতিত হয় কি না। কেননা আগের উম্মতদের ওপর এ পদ্ধতিতে (বৃষ্টি বর্ষণের আকারে) আজাব পতিত হয়েছিল।" {মুসলিমঃ ৮৯৯}
বাংলা উচ্চারণঃ আল্লাহুম্মা ইন্নি আসআলুকা খাইরাহা ওয়া খাইরা মা-ফিহা ওয়া খাইরা মা-উরসিলাত বিহি, ওয়া আউজুবিকা মিন শাররিহা ওয়া শাররি মা-ফিহা ওয়া শাররি মা-উরসিলাত বিহি।
বাংলা অর্থঃ হে আল্লাহ, আমি আপনার কাছে এ বৃষ্টির মাধ্যমে প্রেরিত সমূহ কল্যাণ প্রার্থনা করছি, আর এ বৃষ্টির মাধ্যমে প্রেরিত সমূহ বিপদাপদ থেকে পরিত্রাণ চাই।
বজ্রপাতের সময় যে দোয়া পড়বেন
বিদ্যুৎ চমকানো এবং বজ্রপাতের দুইটি একই বিষয়। সাধারণত আকাশে যখন অনেক মেঘ থাকে তখন যে ধরনের রেখা দেখতে পায় সাধারণত এটিকেই বিদ্যুৎ চমকানো বা বজ্রপাত বলে থাকি। যেহেতু এই বজ্রপাত থেকে আমাদের মৃত্যু হতে পারে তাই অবশ্যই এই সময় আমাদেরকে আল্লাহতালার কাছে দোয়া চাইতে হবে। বিশেষ করে আপনি যখন দেখতে পাবেন আকাশে অনেক মেঘ উঠেছে সাধারণত তখনই বিদ্যুৎ চমকালে দোয়া পড়ে নেবেন।
বজ্রপাত শুনে যে দোয়া পড়তে হবেঃ
আরবিঃ وَيُسَبِّحُ الرَّعْدُ بِحَمْدِهِ وَالْمَلَائِكَةُ مِنْ خِيفَتِهِ
উচ্চারণঃ ওয়া য়ুসাব্বিহুর রা’দু বিহামদিহি, ওয়াল মালাইকাতু মিন খিয়ফাতিহি। {সুরা রাদ, আয়াতঃ ১৩}
অর্থঃ বজ্র ও সব ফেরেশতা সন্ত্রস্ত হয়ে তার প্রশংসা পাঠ করে।
বজ্রপাত থেকে রক্ষা পাওয়ার দোয়াঃ
আরবিঃ اللَّهُمَّ لاَ تَقْتُلْنَا بِغَضَبِكَ وَلاَ تُهْلِكْنَا بِعَذَابِكَ وَعَافِنَا قَبْلَ ذَلِكَ
উচ্চারণঃ আল্লাহুম্মা লা-তাক্বতুলনা বিগাজাবিকা, ওয়া লা-তুহলিকনা বিআজা-বিকা; ওয়া আ-ফিনা-ক্বাবলা জা-লিকা।
অর্থঃ হে আল্লাহ, আপনি আমাকে আপনার গজব দিয়ে হত্যা করে দেবেন না এবং আপনার আজাব দিয়ে ধ্বংস করে দেবেন না। এসবের আগেই আপনি আমাকে পরিত্রাণ দিন। {তিরমিজি, হাদিসঃ ৩৪৫০}
বিদ্যুৎ চমকালে দোয়া - বিদ্যুৎ চমকানো কিঃ শেষ কথা
প্রিয় বন্ধুগণ আজকের এই আর্টিকেলে বিদ্যুৎ চমকানো কি? কিভাবে বিদ্যুৎ চমকায়? বিদ্যুৎ চমকালে দোয়া, বজ্রপাতের সময় যে দোয়া পড়বেন সাধারণত এ বিষয়গুলো বিস্তারিত আলোচনা করেছি। আপনি যদি এই দোয়াগুলো সম্পর্কে না জেনে থাকেন তাহলে অবশ্যই আপনাকে বিষয়গুলো সম্পর্কে আগে জেনে নিতে হবে। কারণ এই সময় অবশ্যই আল্লাহ তায়ালার কাছে দোয়া করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং জরুরী কাজ।
আরো পড়ুনঃ মুখে শসা ব্যবহারের নিয়ম
এতক্ষণ আমাদের আর্টিকেলের সঙ্গে থাকার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। এই ধরনের গুরুত্বপূর্ণ এবং তথ্যমূলক আর্টিকেল নিয়মিত পড়তে আমাদের ওয়েবসাইট ভিজিট করতে থাকুন। কারণ আমরা আমাদের ওয়েবসাইটে নিয়মিত এ ধরনের আর্টিকেল প্রকাশ করে থাকি। ২৫৪২৭
এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url