১২ ই রবিউল আউয়াল সম্পর্কে আলোচনা

 


আপনার অনেকেই জানেন ১২ই রবিউল আউয়াল সম্পর্কে আলোচনা করব যারা জানেন না তাদের জন্য আজকের পোস্টটি অনেক গুরুত্বপূর্ণ হতে চলেছে আজকে আমরা আপনাদের সামনে ১২ই রবিউল আউয়াল সম্পর্কে সঠিক তথ্য তুলে ধরার চেষ্টা করব। এই জন্য আজকে আপনারা আমাদের সাথে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত আমাদের সাথেই থাকবেন এবং আমার আপনাদের মূল্যবান মন্তব্য আমাদেরকে জানাবেন।

 পোস্ট সূচীপত্র: ১২ই রবিউল আওয়াল সম্পর্কে আলোচনা

ভূমিকা

 প্রিয় পাঠক আসুন আমরা আজকের এই পোস্ট থেকে জেনে নেই ১২ই রবিউল সম্পর্কে কিছু তথ্য প্রতিবছর আমাদের দেশে ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা ১২ই রবিউল  এই দিনটাকে পালন করে থাকে |  ১২ই রবিউল আউয়াল এই দিনটা উদযাপনের ব্যাপারে আমরা আপনাদের সামনে আজকে তুলে ধরব সঠিক তথ্য জানতে হলে আমাদের সাথে শেষ পর্যন্ত থাকবেন আশা করছি ধন্যবাদ।

 ১২ই রবিউল আউয়াল

আসুন আমরা এই পোস্ট থেকে জেনে নেই ১২ই রবিউল আউয়াল সম্পর্কে কিছু কথা | এই দিনটাকে রাসূলুল্লাহ সাঃ এর জন্ম দিবস হিসেবে ধরা হয় মানুষের কাছে রাসুলুল্লাহ সাঃ এর জন্মদিন হিসেবে পরিচিত তাই এই দিনটাতে মিলাদুন্নবী পালন করা হয় |আবার অনেকে আছে যারা এই দিনটাকে জাসনে জুলুস বানিয়ে রেখেছে এবং বিভিন্নজন বিভিন্নভাবে এই দিনটিকে পালন করে | ঈদে মিলাদুন্নবীর অর্থ হচ্ছে নবীজির জন্মদিন হিসেবে খুশি বা উৎসবের দিন 

এবং জশনে জুলুস অর্থ এই দিনটা বড়সড়ো মিছিল বা রেলি বের করে মাইকিং করে মিছিল করা অর্থাৎ নবীজির জন্ম কে উদ্দেশ্য করে একটা  বড়সড় মিছিল বের করা |


১২ই রবিউল আউয়াল নবীজির জন্মবার্ষিকী পালন করার ব্যাপারে এবং উৎসব ও অনুষ্ঠান করা নিয়ে বা করা যাবে কি যাবে না এই ব্যাপারে কয়েকটি বিষয়  আমরা আপনাদের সামনে এই পোস্টটিতে তুলে ধরার চেষ্টা করব |


১ | ১২ই রবিউল আউয়াল মুহাম্মদ সাল্লাহু সাল্লাম এর জন্মতারিখ অনেকের ধরে হয় কিন্তু এই দিনে যে নবী করীম সা জন্মগ্রহণ করেছেন বিষয়টা নিয়ে এক্সেলাপ আছে মতবিরোধ আছে মহৎ পিক ও সুনামধন্য বড় বড় ওলামায়ে কেরামদের মতে নবীর জন্ম তারিখ ৮ ই রবিউল আউয়াল | সুতরাং কেউবা কারা যদি ১২ই রবিউল আউয়ালা সাল্লামের জন্মবার্ষিকী পালন করেন তাহলে অপ্রাসঙ্গিক ভিত্তিহীন ও বাস্তবতা বিরোধী |


২ | ১২ই রবিউল আওয়ালে  রাসুলুল্লাহ সাঃ এর জন্ম তারিখ কিনা এ বিষয়টি নিয়ে অনেক মতবিরোধ রয়েছে পক্ষান্তরে এই তারিখটিকে নবীজির ওফাতের দিনে ধরা হয়  |সুতরাং যেদিনটি নবীজির ওফাতের দিন হবে সেদিন কি নবীজির প্রকৃত উম্মতরা শনে জুলুস বা মিছিল বা র‍্যালি বের করতে পারে কেননা সেদিন তো উম্মতের জন্য কষ্ট ও বেদনাদায়ক স্মৃতি বিজলিত দিন হওয়ার কথা ছিল | কিন্তু এই দিনটি আমরা কি করছি কিছু কিছু লোক যারা জানে না যারা শরীয়ত বোঝেনা দ্বীনই দ্বীন ইসলাম বোঝেনা ইলমের জ্ঞান নাই যার কাছে। এই সমস্ত লোক এই দিনটাকে উৎসব বানিয়ে রেখেছে, অথচ এই দিনটা মানুষের কাছে বেদনাদায়ক দিন হওয়ার কথা | তাহলে এই দিনটা উৎসব ও বিভিন্ন জশনে জুলুস করা অপ্রাসঙ্গিক ও অবৈধ |


৩ |  যদি ধরেন এই দিনটি মেনে নেওয়া হল 12ই রবিউল আওয়াল রাসুলুল্লাহ সাঃ এর পৃথিবীতে জন্ম নেওয়ার তারিখ তবুও কি ইসলামে জন্মদিন পালন করা অথবা মৃত্যু দিবস পালন করা কোন দলিল প্রমাণ নেই এসমস্ত দিবস পালনের পক্ষে এগুলো মানুষেরই তৈরি রসম রেওয়াজ | নবী মুহাম্মদ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু সাল্লাম কে সবচাইতে বেশি মান্য করেছেন সাহাবায়ে কেরাম সবচাইতে বেশি ভালোবেসেছেন সাহাবায়ে কেরাম অথচ তারা এই দিনটি পালন করেননি |যদি সাহাবায়ে কেরামরা এদিক পালন করতো তাহলে তাদের মধ্যেও এখতেলাফ অথবা মতবিরোধের হওয়ার  কোন অবকাশ ছিল না |


৪ | নবী মুহাম্মদ রাসূলুল্লাহ সাল্লাম এর সিরাত মোবারক নিয়ে বক্তব্য দেওয়া বা  কোন মজলিস করা অত্যন্ত বরকত ময় |  নবী সাঃ এর প্রতি আমাদের মহব্বত ভালোবাসা যাক  নবীজির সুন্নত নিয়ে নবীজির আদর্শ নিয়ে এরূপ আলোচনা করা  যে সমস্ত মজলিসগুলোতে শরীক থাকা নবী প্রতি ভালোবাসা ও শ্রদ্ধা একটা প্রতীক  |অতএব ১২ই রবিউল আউয়ালকে নির্দিষ্ট করে কোন দোয়ার অনুষ্ঠান বা কোন আলোচনা আর মজলিস না করে অন্য কোনদিন এ সমস্ত  মজলিস করা এতে করেযেমন রহমত ও বরকত লাভ হবে তেমনি ভিত্তিহীন অপ্রাসঙ্গিক দশম রেওয়াজ করা থেকে নিষ্কৃতি পাওয়া যাবে।  এবং সমাজের লোকজন একটি বেদাত যেটা শরীয়তসম্মত আমল না সেটা থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে | 


৫ |শুধুমাত্র ১২ ই রবিউল আলে নবীজির সিরাত থেকে আলোচনার মজলিস করা বিভিন্ন মসজিদ বোলাতে এটাই না এটা করার দ্বারা আমাদের সমাজে একটা রসম একটা রেওয়াজে পরিণত হয়েছে শুধু যে এই দিনেই করতে হবে এমন কোন কথা নেই অন্যান্য দিনেও করা যায় |  রসূলের সিরাত থেকে কোরআন হাদিস প্রাসঙ্গিক আলোচনা এটা যেকোনো দিন যেকোনো সময় হতে পারে এটা নিয়ে কোন নির্দিষ্ট দিন করা এটা এক ধরনের রসম রেওয়াজ এটা না করাই ভালো আর প্রতিনিয়ত যদি রসুলের উপরে  রসুলের সিরাতের উপরে কোরআন হাদিস দিয়ে আলোচনা হয় তাহলে এটা আমাদের জন্য অনেক উপকারী আমাদের জন্য অনেক ভালো হয় আমাদের ঈমান বেড়ে যাবে আমাদের আমল করতে সুবিধা হবে আর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু সালামের তরিকায় চলা সহজ হয়ে যাবে |

জন্মদিন পালন

 আসুন আমরা জন্মদিন পালন সম্পর্কে কিছু কথা জেনে নেই | শরীয়তের পরিভাষায় জন্মদিন পালন করা একেবারেই নিষেধ জন্মদিন পালন করা যাবে না এটা থেকে বিরত থাকতে হবে | এই রেওয়াজটা আমাদের তৈরি রেওয়াজ এটার ব্যাপারে কোরআন হাদিসে কোন দলিল নেই। পালন করার ব্যাপার কিন্তু অনেক মহা কি আলেমদের মত যে এই দিনটা পালন করা থেকে আমাদেরকে বিরত থাকতে হবে নচেৎ আমাদের গুনাহ হবে |জন্মদিন বাদ দিয়ে অন্য কোন দিন একটা জিনিস করা যেতে পারে সেটা হলো যার জন্মদিন তাকে উপলক্ষ করে কিছু ফকির খাওয়ানো কিছু সটকা করা তার সুস্বাস্থ্য বা লম্বা হায়াত নেক হায়াতের জন্য দোয়া খায়ের ব্যবস্থা করা এরকম হতে পারে |


মৃত্যু দিবস পালন করা

 আসুন আমরা এই পোস্ট থেকে জেনে নিই মৃত্যু দিবস পালন করার ব্যাপারে কিছু কর আমাদের সমাজে মৃত্যু দিবস পালনের প্রথা চালু রয়েছে কিন্তু আসলে এটা অপ্রাসঙ্গিক ভিত্তিহীন কোরআন হাদিসের কোন দলিল বা প্রমাণ নেই যে কেউ মারা গেলে সে যেই হোক না কেন সেই দিন তার মৃত্যুবার্ষিকী পালন করতে হবে অথবা মৃত্যুর পর তিন দিন পালন করা বা মিলাদ দোয়ার অনুষ্ঠান করা লোকজনকে খাওয়ানো এটা করা যাবে না কোন নির্দিষ্ট দিন ঠিক করে মৃত ব্যক্তির জন্য দোয়ার অনুষ্ঠান বা ফকির মিসকিনকে খাওয়ানো এটা অপ্রাসঙ্গিক ভিত্তি বা চল্লিশা এটাও কোরআনে ভিত্তিহীন এই আমলটাও মানুষের তৈরি | 


তিন দিন চল্লিশা এগুলো একটা ভিত্তিহীন আমল মানুষের বানানো আমল এগুলা করলে কোন সওয়াব নেই তবে মৃত ব্যক্তির জন্য আপনি দোয়া খায়ের সাদকা মানুষকে খাওয়ালো এ সমস্ত আমল গুলো করতে পারেন কিন্তু নির্দিষ্ট দিন তারিখের ঠিক করে যেমন তিনদিন ৪০ দিন অথবা মৃত্যুবার্ষিকী এ সমস্ত দিনে দুয়া খায়ের করলে ফকির-মিসকিন খাওয়ালে সদকা করলে কোন সওয়াব নাই কৃত ব্যক্তির জন্য | যদি মৃত ব্যক্তির জন্য সব পাঠাইতে চান তাহলে নির্দিষ্ট দিন ঠিক করে পারা যাবে না যে কোন দিন  সদকা করা যেতে পারে দোয়া খায়ের বা ফকির মিসকিন খাওয়ানো যেতে পারে তাহলে সব পাওয়া যাবে | 

আখেরি চাহার শোমরাহ

আসুন আমরা আজকের পোস্টে থেকে জেনে নিই আখেরি চাহার শোমরাহ সম্পর্কে কিছু কথা এই শব্দের অর্থ শেষ বুধবার |আখেরি চাহার  শোমরা সফর মাসটির শেষ বুধবারকে ধরা হয়েছে  এই দিনটার বিষয়ে বলা হয় নবীজি সাঃ এই দিনটিতে অসুস্থতা  মধ্যে রবিউল আউয়াল মাসে শুরুর দিকে ওফাত লাভ করে |নবীজি সেই অসুস্থতা থেকে সফর মাসের শেষের দিকে অর্থাৎ বুধবারে আখেরি চাহার শোমরাহ কিছুটা সুস্থ হন তাই এই দিনটিকে খুশির দিন বা আনন্দের মনে করে পালন করা হয় |এই তথ্যটি ভুল সঠিক না বরঞ্চ বিশুদ্ধ সহি মত বা তথ্য হলো এই দিন বুধবার রাসূলুল্লাহ সাঃ বেশি অসুস্থ হয়ে  গেছিলেন | অসুস্থতা বেড়ে যাওয়ার দিনটি ইহুদিরা সারাদের জন্য খুশির দিন হতে পারে আনন্দের দিন হতে পারে আমরা মুসলমানদের জন্য এই দিন খুশির দিন হতে পারে না কক্ষনো না  |অতএব এই দিনটি খুশির দিন হিসেবে উদযাপন করা বা সরকারি ছুটি ঘোষণা করা এটা  ভিত্তিহীন অপ্রাসঙ্গিক নাজায়েজ | 

শেষ ভাবনা

 আজকে আমরা এই পোস্ট থেকে জানতে পারলাম ১২ই রবিউল আউয়াল তথা ঈদে মিলাদুন্নবী সম্পর্কে কিছু কথা আমরা এই পোস্ট থেকে যা কিছু জানলাম যা কিছু শিখলাম আমরা অন্যদের কাছে শেয়ার করব আত্মীয় স্বজনদেরকে শেয়ার করব এবং আমাদের মূল্যবান মন্তব্য জানাবো এবং আপনারা আমাদের সাথে থাকবেন ইনশাআল্লাহ | ভুলত্রুটি হলে মাফ করবেন মানুষ মাত্রই ভুল এজন্য সকলে ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন | 






এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url